ট্যাংকলরি শ্রমিকদের কর্মবিরতি, ১৪ জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
২৬-০১-২০২৫ ০৬:২৫:১৬ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৬-০১-২০২৫ ০৬:২৫:১৬ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলী আযিমকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে নগরীর নতুন রাস্তা মোড় অবরুদ্ধ করে কর্মবিরতি পালন করছেন ট্যাংকলরি শ্রমিকরা।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুর ১টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মবিরতির ফলে খুলনা ও ফরিদপুর অঞ্চলের ১৪ জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পদ্মা-মেঘনা-যমুনা ট্যাংকলরি শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।সাধারণ সম্পাদক আলী আযিমকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তারা এই অবরোধ করেছেন।
তিনি জানান, বিএনপির অফিস ভাঙচুর মামলায় রবিবার দুপুর ১২টার দিকে আলী আযিমকে গ্রেপ্তার করেছে খালিশপুর থানার পুলিশ।
এদিন দুপুর ১টা থেকে শ্রমিকরা সড়কে গাড়ি রেখে প্রতিবাদ শুরু করেন। নগরের কাশিপুর মোড়ে সড়ক আটকে দেওয়ায় খালিশপুর হয়ে দৌলতপুরের দিকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এর ফলে ১৪ জেলায় জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।
খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমিক নেতা আলী আযিম এজাহারনামীয় আসামি। বিএনপির অফিস ভাঙচুর মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
এদিকে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। খুলনা বিভাগসহ বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে ৬ দফা দাবির বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ ধর্মঘটের ডাক দেয় সংগঠনটি।
পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে দাবিগুলো পূরণ করা না হলে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে খুলনা বিভাগসহ বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে ধর্মঘট শুরু হবে।
৬ দফা দাবি গুলোর মধ্যে রয়েছে- যশোর বেনাপোলের কিবরিয়া ফিলিং স্টেশনটি সন্ত্রাসী আনোয়ার হোসেন ও তার সহযোগীদের দখল থেকে মুক্ত করতে হবে এবং তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
যেখানে-সেখানে সিগন্যাল দিয়ে ট্যাংকলরির কাগজপত্র চেকের নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
মালিক-শ্রমিক নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের এবং হুমকি প্রদান বন্ধ করতে হবে। এ ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের তদন্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিসসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক ফিলিং স্টেশনগুলোতে অযথা হয়রানি বন্ধ করতে হবে। অনুমোদনবিহীনভাবে যত্রতত্র জ্বালানি তেল বিক্রয় বন্ধ করতে হবে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্যাংকলরি (নং রাজবাড়ী চ-৪১-০০০৪) সংক্রান্ত ক্ষতিপূরণ সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হলেও মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। অবিলম্বে এই মামলাটি নিষ্পত্তি করতে হবে।
ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। তাই দাবি আদায়ে এবার তারা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে।
পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন, দাবিগুলো পূরণ না হলে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘটের ফলে খুলনা বিভাগ এবং বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে জ্বালানি তেলের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিল্প খাতেও ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।
সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষকে সময়সীমার মধ্যে দাবি পূরণের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। অন্যথায় ধর্মঘটের দায়ভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে বলে তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
বাংলা স্কুপ/ ডেস্ক/ এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স